ইভেন্টের নামে পর্নচক্র! নারকীয় নির্যাতনে বিধ্বস্ত তরুণী, অভিযুক্ত মা-ছেলে লাপাত্তা

 ইভেন্ট ম্যানেজমেন্টের চাকরির প্রলোভনে ডেকে এনে এক তরুণীকে বার ড্যান্সার হিসেবে জোর করে নামানো, পরবর্তীতে পর্নোগ্রাফি তৈরিতে বাধ্য করার মতো ভয়াবহ অভিযোগ উঠেছে ডোমজুড়ের বাসিন্দা আরিয়ান খান ও তাঁর মা শ্বেতা খানের বিরুদ্ধে। শ্বেতা স্থানীয়দের কাছে ‘ফুলটুসি’ নামে পরিচিত।

শনিবার বিকেলে খড়দহ ও ডোমজুড় থানার যৌথ অভিযানে বাঁকড়া এলাকায় অভিযুক্তদের বাড়িতে হানা দেওয়া হলেও, পুলিশ তাঁদের খুঁজে পায়নি। তদন্তকারীরা জানাচ্ছেন, অভিযুক্ত মা-ছেলে পলাতক। আশপাশের একাধিক বাড়িতে তল্লাশি চালানো হয়, কিন্তু কোনও হদিস মেলেনি।

চাকরির নাম করে ফাঁদ, ছয় মাস ধরে অত্যাচার

পানিহাটির এক তরুণী অভিযোগ করেছেন, 'ইভেন্ট ম্যানেজমেন্টে কাজ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ডেকে আনা হয়েছিল তাকে। কিন্তু তার পরে জোর করে বার ড্যান্সারের কাজ করতে বাধ্য করা হয়। না বললেই মারধর। লোহার রড দিয়ে শরীরের সর্বত্র মারা হতো। এমনকি গোপনাঙ্গেও। বুকে সিগারেটের ছ্যাঁকাও দেওয়া হয়েছে।'

বর্তমানে তিনি গুরুতর আহত অবস্থায় সাগর দত্ত মেডিকেল কলেজে চিকিৎসাধীন। তাঁর মা জানান, মেয়ে এতটাই মার খেয়েছে যে দাঁড়াতে পারছে না, সারা শরীরে আঘাতের দাগ।

‘ইশারা প্রোডাকশন’-এর আড়ালে পর্ন ব্যবসা?

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ‘ইশারা’ নামে একটি প্রোডাকশন হাউস খুলে আরিয়ান ও তাঁর মা তরুণীদের চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে ডেকে আনতেন। তারপর তাঁদের জোর করে পর্নোগ্রাফি তৈরির কাজে ব্যবহার করা হতো।

এই চক্রের হাত থেকে কোনওভাবে একদিন আগে পালাতে সমর্থ হন ওই তরুণী। সূত্রের খবর, আরিয়ানের ঠাকুমাই সিসিটিভি বন্ধ করে তরুণীকে পালাতে সাহায্য করেন।

অভিযোগের পাহাড়, রহস্যময় গা-ঢাকা

স্থানীয়দের মতে, শ্বেতা খান ও তাঁর ছেলে আরিয়ানের বিরুদ্ধে সমাজবিরোধী নানা কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। আরিয়ানের বিরুদ্ধে আগে ছিনতাইসহ একাধিক অভিযোগ পুলিশের খাতায় রয়েছে বলেও জানা গিয়েছে।

তবে বর্তমানে তাঁরা দু’জনেই আত্মগোপনে। পুলিশ জানিয়েছে, তাঁদের খোঁজে তল্লাশি চালানো হচ্ছে, এবং খুব শীঘ্রই তাঁদের গ্রেফতার করা হবে বলে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।